স্বাগতম থ্রি ব্রাদার্স এগ্রো এন্ড ডেইরি লিমিটেডে “গাভীর মুখে দিলে ঘাস দুধ পাবেন বারো মাস”। আসছে শীতকাল। এ সময় গরু ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ অন্যান্য গবাদিপশু-পাখির নানান রকমের রোগবালাই হয়ে থাকে। গবাদিপশু পাখির শীতকালীন কিছু কমন রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রিয় মোহন দাস। গামবোরো রোগ গামবোরো একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এ রোগে বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে ব্রয়লার, কক, সোনালী ও লেয়ার মুরগি মারা যায়। তাই এ রোগের মুরগির মৃত্যুর পাশাপাশি আক্রান্ত ফ্লক ইম্যুনোসাপ্রেশনে ভোগে। আর তাই এ রোগকে মুরগির এইডস বলা হয়। আর এ ধরনের ফ্লক থেকে কখনই আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায় না। রোগের লক্ষণ গামবোরো রোগের কিছু কমন লক্ষণ হলো পানি না খাওয়া, খাদ্য না খাওয়া, পাতলা পায়খানা হওয়া ইত্যাদি। চিকিৎসা ও প্রতিকার এন্টিবায়োটিক হিসেবে সিপ্রোফ্লক্সাসিন ১০% ব্যবহার করা যায়। এটি রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে আর শরীরে থাকেও দীর্ঘক্ষণ। ফলে দ্রুত কাজ শুরু হয়ে যায়। ১ লিটার পানিতে ১ মিলি পরপর ৩-৫ দিন সবসময়ের জন্য পানিতে দিতে হবে। যে কোনো ভালো অর্গানিক এসিড কোম্পানি নির্দেশিত মাত্রায় ব্যবহার করা যেতে পারে। অর্গানিক অ্যাসিডগুলো কিডনি হতে ইউরেট দূর করতে সহায়তা করে। এ ক্ষেত্রে ভিনেগার ব্যবহার করা যায়। গলাফুলা রোগ গলাফুলা (hemorrhagic septicemia) এশিয়া, আফ্রিকা, দক্ষিণ ইউরোপের কিছু দেশ ও মধ্যপ্রাচ্যে বিদ্যমান। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এটি বেশি পরিলক্ষিত হয়। গলাফুলা একটি তীব্র প্রকৃতির রোগ যা গরু এবং মহিষকে আক্রান্ত করে। এটি একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ, যা Pasteurella multocida দ্বারা সংঘটিত হয়। এ রোগে মৃত্যুর হার খুবই বেশি। পশুর শরীরে স্বাভাবিক অবস্থায় এ রোগের জীবাণু বিদ্যমান থাকে। কোনো কারণে যদি পশু ধকল যেমন ঠাণ্ডা, অধিক গরম, ভ্রমণজনিত দুর্বলতা ইত্যাদির সম্মুখীন হয় তখনই এ রোগ বেশি দেখা দেয়। গলাফুলা রোগের প্রচলিত নাম ব্যাংগা, ঘটু, গলগটু, গলবেরা ইত্যাদি। রোগের লক্ষণ এ রোগ অতি তীব্র ও তীব্র এ দুইভাবে হতে পারে। অতি তীব্র প্রকৃতির রোগে হঠাৎ জ্বর হয়ে মুখ ও নাক দিয়ে তরল পদার্থ বের হতে থাকে। পশু অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে ও খাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু ঘটে। তীব্র প্রকৃতির রোগে আক্রান্ত পশু ২৪ ঘন্টার অধিক বেঁচে থাকে। এ সময় পশুর এডিমা দেখা দেয় যা প্রথমে গলার নিচে, পরে চোয়াল, তলপেট এবং নাক, মুখ, মাথা ও কানের অংশে বিস্তৃত হয়। গলায় স্ফীতি থাকলে গলার ভেতর ঘড় ঘড় শব্দ হয়, যা অনেক সময় দূর থেকে শোনা যায়। প্রদাহযুক্ত ফোলা স্থানে ব্যথা থাকে এবং হাত দিলে গরম ও শক্ত অনুভূত হয়। মুচ দিয়ে ছিদ্র করলে উক্ত স্থান হতে হলুদ বর্ণের তরল পদার্থ বের হয়ে আসে। অনেক সময় কাশি হয় এবং চোখে পিচুটি দেখা যায়। নাক দিয়ে ঘন সাদা শ্লেষ্মা পড়তে দেখা যায়। সাধারণত লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আক্রান্ত পশু মারা যায়। চিকিৎসা ও প্রতিকার আক্রান্ত পশুর চিকিৎসায় বিলম্ব হলে সুফল পাওয়া যাবে না। তাই রোগের উপসর্গ দেখা দেয়ার সাথে সাথে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এ রোগের চিকিৎসায় Ampicillin, Tetracycline, Erythromycin, Sulphonamide জাতীয় ইনজেকশন গভীর মাংসে দিয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। এ রোগ উচ্ছেদ করা অসম্ভব কারণ এ রোগের জীবাণু স্বাভাবিক অবস্থায় পশুর দেহে থাকে। তবে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা অবলম্বন করে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। রোগাক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে আলাদা করে সুস্থ পশুকে টিকা দানের ব্যবস্থা করতে হবে। মড়কের সময় পশুর চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পশুর পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে। টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। ক্ষুরারোগ এটি ভভইরাসজনিত একটি মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধি। দুই ক্ষুরওয়ালা সব প্রাণীই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে আমাদের দেশে সাধারণত গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া এ রোগের শিকার হয় বেশি। বাতাসের সাহায্যে এ রোগের ভাইরাস দূরবর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। রোগের লক্ষণ প্রথম অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। মুখ দিয়ে লালা ঝরে এবং লালা ফেনার মতো হয়। পশু খেতে পারে না এবং ওজন অনেক কমে যায়। দুগ্ধবতী পশুতে দুধ অনেক কমে যায়। বাছুরের ক্ষেত্রে লক্ষণ দেখা দেয়ার আগেই বাছুর মারা যেতে পারে। চিকিৎসা ও প্রতিকার আক্রান্ত প্রাণীর মুখ ও পায়ের ঘা পটাশিয়াম পারম্যাংগানেট মেশানো পানি বা খাওয়ার সোডা মেশানো পানি দিয়ে দিনে ৩-৪ বার ধুয়ে দিতে হবে। ওষুধ মেশানো পানি দিয়ে ক্ষতস্থান ধোয়ার পরে সালফা নিলামাইড বা এ ধরনের পাউডার লাগাতে হবে। চার ভাগ নারকেল তেলের সাথে ১ ভাগ তারপিন তেল মিশিয়ে লাগালে ক্ষতস্থানে মাছি পড়বে না। গরুর বাদলা রোগ বাদলা রোগ গরুর ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক রোগ। ক্লস্ট্রিডিয়াম শোভিয়াই নামক ব্যাকটিরিয়া জীবাণু এ রোগের প্রধান কারণ- রোগের লক্ষণ তীব্র রোগে প্রথমে জ্বর হয় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে পেছনের অংশে মাংসপেশি ফুলে যায়। ফোলা জায়গায় চাপ দিলে পচ পচ শব্দ হয়। আক্রান্ত অংশ কালচে হয়ে যায় ও পচন ধরে। রোগাক্রান্ত প্রাণী দুর্বল হয়ে মারা যায়। চিকিৎসা ও প্রতিকার অ্যান্টিব্লাকলেগ সিরাম প্রতিটি আক্রান্ত পশুর শিরা বা ত্বকের নিচে ১০০-২০০ মিলিলিটার ইনজেকশন দিতে হবে (যদি পাওয়া যায়) অ্যান্টিহিসটামিনিক জাতীয় ইনজেকশন যেমন- হিস্টাভেট, ডিলারজেন, ফ্লুগান ইত্যাদি দৈনিক ৬ সি.সি. করে ৩ দিন মাংসে ইনজেকশন দিতে হবে। প্রয়োজনে আক্রান্ত ক্ষতস্থান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পরিষ্কার করে টিংচার আয়োডিন গজ প্রয়োগ করতে হবে। আক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। মৃত পশুকে মাটির নিচে কলিচুন সহযোগে পুঁতে ফেলতে হবে। জীবাণুনাশক দিয়ে গোয়ালঘর পরিস্কার করতে হবে। ফ্যাসিওলিয়াসিস রোগ গবাদিপশুর যকৃতে ফ্যাসিওলা জাইগানটিকা ও ফ্যাসিওলা হেপাটিকা নামক পাতাকৃমি দ্বারা সৃষ্ট পশুর রোগকে ফ্যাসিওলিওসিস বলে। রক্তস্বল্পতা, ম্যান্ডিবুলের নিচে পানি জমা, যা দেখতে বোতলের মতো, ডায়রিয়া এবং ধীরে ধীরে কৃশকায় অবস্থায় পরিণত হওয়াই এ রোগের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশে প্রায় ২১ ভাগ গরুতে এবং সিলেট অঞ্চলে প্রায় ২১.৫৪ ভাগ ছাগলে ফ্যাসিওলা জাইগানটিকা পাতাকৃমিতে হয়। রোগের লক্ষণ আক্রান্ত পশুর যকৃতে অপ্রাপ্তবয়স্ক কৃমির মাইগ্রেশনের ফলে যকৃত কলা ধ্বংস হয় এবং যকৃতিতে প্রোটিন সংশ্লেষণ হ্রাস পায়। এতে পশুর হাইপোপ্রিটিনিমিয়া তথা বটল জ্বর হয়। বদহজম ও ডায়রিয়া দেখা দেয়। ক্ষুধামন্দা ও দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়। চোখের কনজাংটিভা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। তীব্র যকৃত প্রদাহ এবং রক্তক্ষরণের ফলে লক্ষণ প্রকাশের আগেই পশুর হঠাৎ মৃত্যু ঘটে।

Header Ads

Header ADS

3Brothers Agro & Dairy Shed


আমাদের অঙ্গীকার হলো নিরাপদ খাদ্য সবার অধিকার, দেশের কৃষি ব্যবসায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে আমরা অ্যান্টিবায়োটিক এবং গ্রোথ প্রোমোটার মুক্ত হালাল স্বাস্থ্যকর মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য নিশ্চিত করি।

3 comments:

  1. Thanks for sharing this blog, are you looking for Dairy Plant Manufacturer?, Then visit NK Dairy Equipments - Khoya Machine, Dairy Equipments. Contact us for more information, and to make an order visit our official website.

    ReplyDelete

Powered by Blogger.